শিরোনাম
দৈনিক অনুসন্ধান | ০৫:১১ পিএম, ২০২২-০২-১৭
মোঃ মুবিনুল হক, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভাটি বাংলার সাগরকূলীয় এক অবহেলিত এলাকা ভুলুয়া। ভুলুয়ার জনগণ তাদের মৎস্যশিকার আর চাষাবাদ নিয়ে বেশ সুখে জীবন কাটাচ্ছিল। তাদের সকলের গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরু আর পুকুরভরা মাছ না থাকলেও মনে ছিল বেশ প্রশান্তি। গৃহস্থরা অপেক্ষাকৃত গরীবদের দিয়ে তবেই খেত। গাছের ফল পেকে নিচে পড়ে থাকত, তবু গৃহস্তের অনুমতি ছাড়া কেউ একটি ফল স্পর্শ করত না। গৃহস্থরা সকলের জন্য তাদের সম্পদ উম্মুক্ত করে দিত। সমাজের অনুষ্ঠান উপাচারে বড়-ছোট কোন ভেদ ছিল না। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! বাংলার শেষ নবাব সিরাউদৌল্লা বিশ্বাসঘাতকদের কবলে পড়ে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হলেন। তখন সমগ্র বাংলার মত সুখী-সমৃদ্ধ জনপদ ভুলুয়াও ব্রিটিশদের অধীনে চলে যায়। বাংলার ব্যবসায়ী ও গৃহস্থদের উপর চড়াহারে কর নির্ধারণ ও ব্রিটিশদের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ের কারণে গৃহস্থরা দিনে দিনে তাদের সম্পদ হারাতে থাকে। ধীরে ধীরে সব সম্পদ ব্রিটিশ বেনিয়াদের হাতে চলে যেতে থাকে। ব্রিটিশ সরকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে কলকাতার জমিদার বাবুদের কাছে সমগ্র পূর্ব বাংলা লিজ দিয়ে দেয়। জমিদার বাবুরা কর ও খাজনা আরো বাড়িয়ে দেয়। তারা ধান-গমের পরিবর্তে নীলচাষে জনগণকে বাধ্য করে। নীল চাষ ও কর অনাদায়ে চাষীদের কুঠিবাড়িতে নিয়ে চাবুকপেটা করতে থাকে। শাসনের নামে এই নিষ্ঠুর শোষণ এবং হিন্দু-মুসলমান সীমাহীন বৈষম্যের ফলে বাঙালি মুসলিম সমাজ ধীরে ধীরে দরিদ্র হতে থাকে। কিন্তু নিরীহ ও সরল বাঙালি মুসলিম সমাজ ছাড় দিতে দিতে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলে। তাদের হালের গরু, ফসলী মাঠ, ক্ষেতের ফসল, পুকুরের মাছ সবই জমিদার বাবুদের ভাড়ারে জমা হতে থাকে।
এমনি এক দুর্দিনে ভুলুয়ার পানাহি ও রহিমার ঘর আলো করে এল এক পুত্র সন্তান। পানাহি খবর পাওয়ামাত্র গঞ্জ থেকে ময়রার দোকানের রসগোল্লা নিয়ে ছুটে এলেন বাড়িতে। নবজাতক পুত্রের কানে আজান দিয়ে সকলের মাঝে রসগোল্লা বিতরণ করলেন তিনি। আকিকা দিয়ে ছেলের নাম রাখলেন নূর মোহাম্মদ। বায়োবৃদ্ধ শেখ নাসের মোহাম্মদ পৌত্রের জন্মের ফলে একজন খেলার সাথী পেয়ে গেলেন।
দাদা আর মা-বাবার আদরে নূর মোহাম্মদ দিনে দিনে বড় হতে লাগল। আরবী ও ফার্সী ভাষায় দাদা ও বাবার পারদর্শীতা বালক নূর মোহাম্মদের জন আশীর্বাদ হিসেবে এল। সে তাঁদের নিকট থেকে এই দুই ভাষায় বেশ জ্ঞান অর্জন করল। গ্রামের মক্তব থেকে পবিত্র কুরআন শিক্ষা ও সমাপন করল।
একদিন সকালে পানাহী ছেলেকে ডেকে বললেন, বাবা নূর! তুমি নিজের মেধা ও আগ্রহে আমাদের সকলের জ্ঞান অর্জন করে নিয়েছ। সময় হয়েছে, তোমাকে বড় পাঠশালায় ভর্তি করানোর। চল তোমাকে বাহমনির মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিই।
নূরের দাদা শেখ নাসের নাতিকে কাছে ডেকে বললেন, বাবা! সেখানে আমার সুপরিচিত একজন আলিম ও বুযুর্গ ব্যক্তি আছেন। যিনি দুনিয়া ও আখিরাতের এলেমের কামিল ব্যক্তি। তিনি আজিমপুর দায়রা শরীফের সূফী দায়েমের খলীফা শেখ জাহিদ।
পানাহী বললেন, জ্বি বাবা! আমি উনার মাদ্রাসাতেই নূরকে ভর্তি করাতে চাই।
শেখ নাসের বললেন, মাশাআল্লাহ। ইনার মত আলেম এ যুগে বিরল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস উনার নিবিঢ় তত্ত্বাবধানে আমাদের নূর আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষা অর্জনে সক্ষম হবে। কি বলো দাদু ভাই। তুমি যাবেতো আমার বন্ধু জাহেদের মাদ্রাসায়?
বালক নূর দাদার কোলে বসে বলল, যাব দাদুভাই। কিন্তু আবার চলে আসব তোমাদের কাছে।
শেখ নাসের বললেন, ঠিক আছে দাদুভাই। তুমি আল্লাহর রহমতে বিদ্যা শিক্ষা লাভ করে আলিম হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে এসো।
দৈনিক অনুসন্ধান : মোঃ হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি . বই উৎসব বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক গণশিক্...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কতৃর্ক আয়োজিত বার্ষিক ক্র...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় কিছু শিশু বেড়ে ওঠে সুবিধা বঞ্চিত হয়ে। আর কিছু শিশু বেড়ে ওঠে সব সুযোগ-সুবিধা ...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : পর্ব: দুই বাহমনি মাদ্রাসায় বালক নূর অতি অল্প সময়ে তার মেধার পরিচয় দিয়ে মোহতামিম মৌলভি জাহেদসহ সকল...বিস্তারিত
মুহাম্মদ মাঈন উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি : আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ইকবাল ইবনে মালেকঃ নব্বইয়ের দশকে আবৃত্তিশিল্পকে যারা গণমানুষের সামনে জনপ্রিয় করে তুলতে সক্ষম হয়...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2023 dailyonusondhan | Developed By Muktodhara Technology Limited