শিরোনাম
মুহাম্মদ মাঈন উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি | ০২:০৭ এএম, ২০২০-০৮-১১
বাংলাদেশে সর্বশেষ আলোচিত বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে পুলিশের হাতে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনার পুরো তদন্ত শুরু করেছে র্যাব।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
তিনি জানান, মেজর সিনহা হত্যা ঘটনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী শিপ্রা দেবনাথ এবং সাহেদুল ইসলাম সিফাত কক্সবাজারে রয়েছেন। তারা চাইলে তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া হবে।
"অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পূর্বে আমরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী শিপ্রা ও সিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।"
এরই মধ্যে শিপ্রা দেবনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতেই জব্দ হওয়া ল্যাপটপ বা অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে সেগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করা হবে বলেও জানান মি. বিল্লাহ।
এদিকে মেজর সিনহাকে হত্যার ঘটনার পরে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড যাতে আর না ঘটে সেই আলোচনা আবারো সামনে এসেছে।
এবিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেজর সিনহার মা নাসিমা আক্তার বলেন, বিচার কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট তারা। সেই সাথে এই ঘটনাই যেন শেষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয় সেই দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন,"সেনাবাহিনীর প্রধান, নৌবাহিনীর প্রধান, প্রত্যেক প্রধানই আমাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি সাংবাদিকদের প্রত্যেকটা জিনিস পড়ছি, আমার হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে।"
"আমি সব মায়েদের প্রতিনিধি হিসেবে বলছি, এধরণের ঘটনা যাতে আর না ঘটে।"
এর আগে ২০০৫ সালে প্রবীণ বামপন্থী নেতা মোফাখখারুল ইসলাম চৌধুরী র্যাবের সাথে ক্রসফায়ারে নিহত হন। এ ঘটনায় প্রথম বড় ধরণের প্রশ্নের মুখে পড়ে র্যাব। তবে তা ধামাচাপা পড়ে যায়।
এর পর ২০১৮ সালে টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক র্যাবের সাথে ক্রসফায়ারে নিহত হন। যে ঘটনা পুরো দেশ জুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে পড়ে।
তবে নিহত একরামুল হকের স্ত্রী আয়শা বেগম জানান, তার স্বামী নিহত হওয়ার পর থানায় মামলা করতে গেলেও তা নেয়া হয়নি। উল্টো নানা ধরণের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে।
"কেস করা হয় নাই। আমাদের এখানে র্যাব আসছিল। তারা বলছে, আপনিও তো মেয়েদের নিয়ে স্কুলে যান একলা। যে কোন মুহূর্তে মৃত্যু হতে পারে।"
কথাগুলো বলতে গিয়ে বার বারই কান্নায় গলা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল দুই সন্তানের এই মায়ের। কান্না আটকে ধীরে ধীরে তিনি বলেন, "আমি এখনো জানি না যে আমার স্বামীকে কে খুন করছে। আমি জানতে চাই। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। কিন্তু কিছু করতে গেলে আমার উপর বিপদ হচ্ছে। আমি কিছুই করতে পারছি না।"
দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের হিসাব বলছে, ২০০১ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় বিশ বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ৪০০২ জন মানুষ।
এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অর্থাৎ ২ হাজার ১৬৩ জন পুলিশের হাতে এবং ১২শ ২৪ জন র্যাবের হাতে নিহত হয়।
অধিকার নামে সংস্থাটি আরো জানিয়েছে যে, ২০০২ সালে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অপারেশন ক্লিনহার্ট নামে যে অভিযান চালানো হয়েছিল তাতে ৩৯ জন নিহত হয়েছিল। তবে তৎকালীন সরকার এ ঘটনাগুলোর দায়মুক্তি দিয়েছিল।
আর নিহত বাকিদের মধ্যে অনেকে অন্য বাহিনী কিংবা একাধিক বাহিনীর যৌথ অভিযানে নিহত হয়।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে শুধু নারায়ণগঞ্জে র্যাবের হাতে ৭জন খুনের ঘটনায় বিচারিক আদালতে বিচার হয়েছিল।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালের প্রথম সাত মাসে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে ২০৭টি।
এর মধ্যে গ্রেফতারের আগে ক্রসফায়ারে ১৪৫ জন এবং গ্রেফতারের পরে ক্রসফায়ারে ৩৭ জন নিহত হয়।
সংস্থাটির সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর নিনা গোস্বামী বলেন, কোন ধরণের জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই এ ধরণের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না।
তার মতে, মাদক চোরাচালান রোধের অজুহাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে দিনের পর দিন চালানো হলেও আসলে সেটি রোধ করা যায়নি।
তিনি বলেন, আলাদাভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থাকলেও সেটি নিষ্ক্রিয়। সেখানে ব্যবহার করা হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
"যাদের যেটা কাজ না তাদের দিয়ে বিচার বিভাগকে পাশ কাটিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছে। এটার কোন জবাবদিহিতা নাই।"
এদিকে, যে কোন গোলাগুলি কিংবা পুলিশের গুলিতে হত্যাকাণ্ড হলে তার তদন্ত হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই এসব তদন্তের ঘটনা মিডিয়াতে আসে না বলে জানান মি. রহমান।
"এ ধরণের তদন্ত তো আর ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হয় না। একটা ম্যাজেস্ট্রেরিয়াল ইনকুয়েরি থাকে, তারা দেখেন। যদি দেখা যায় যে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে তাহলে তো আর কিছু করার থাকে না।"
তিনি মনে করেন, এসব কারণেই আসলে একটা ধরণের মনোভাব তৈরি হয় যে, এতো এতো গোলাগুলি হয় কিন্তু তাদের কোন তদন্ত হয় না। আসলে বিষয়টি সেরকম নয়।
পুলিশ ও র্যাবের বর্তমান কর্মকর্তারাও একই ধরণের দাবি করেছেন।
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কে দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয় হিসেবে আ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে গৃহবধূ হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন নামের এ...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করেন এক মাদক ব্যবসায়ীর পরিবার...বিস্তারিত
সেলিম উদ্দিন, কক্সবাজার প্রতিনিধি : ঈদগাঁও প্রতিনিধি। ব্যাটমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে এক কিশোরের ব্যাটের আঘাতে আরেক কিশোরের ম...বিস্তারিত
সেলিম উদ্দিন, কক্সবাজার প্রতিনিধি : সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও। কক্সবাজারের ঈদগাঁও তরকারি বাজার সড়কে মুক্ত স্বর্ণ শিল্পালয় নামের এক প্রত...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : আঃ হামিদ মধুপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে অটোরিক্সা ছিনতাইকালে এক ছিনতাইকা...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 dailyonusondhan | Developed By Muktodhara Technology Limited