শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩  

শিরোনাম

মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের জায়গা দখলে নিতেই লাগানো হয় আগুন

দৈনিক অনুসন্ধান    |    ১১:৩০ পিএম, ২০২৩-০২-২৫

মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের  জায়গা দখলে নিতেই লাগানো হয় আগুন


সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও।

চারদিকে ছোট ছোট টিলায় সবুজ গাছপালাসমৃদ্ধ কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী মেদাকচ্ছপিয়া। টিলাবেষ্টিত গর্জনবাগানই যুগের পর যুগ মেদাকচ্ছপিয়ার অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। কর্মজীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে কাছের বিনোদনের জায়গা হিসেবে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে অনেকেই মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানকে বেছে নেন।

হাজারো উদ্ভিদ ও প্রাণী পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে গর্জন বাগান। কিন্তু রহস্যময় আগুনে  চারা ও বনের নানা ধরনের প্রাণী, পোকামাকড় পুড়ছে। বন বিভাগ আগুন লাগার নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো বের করতে না পারলেও, হুমকিতে পড়েছে প্রাণীবৈচিত্র্যে ও গর্জন বাগান।

উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের অঙ্গীকার খেলার মাঠ সংলগ্ন রেল রাস্তার আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বনে সম্প্রতি এ রহস্যময় আগুনের ঘটনা ঘটছে। এতে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, প্রকৃতির নিয়ম মেনেই গাছের পাতা ঝরে পড়ার পর তার ভেতর থেকেই বসন্তকালে যখন উঁকি দেয় নতুন নতুন উদ্ভিদ, তখনই বন উজাড় করে তা দখলের উদ্দেশ্যেই রাতের আঁধারেই আগুন দেয় স্থানীয় একটি চক্র। তাদের উদ্দেশ্য, বনের গাছপালা পুড়ে বন পরিষ্কার করে তা দখলে নেওয়া।

বন বিভাগ জানায়, প্রায় ৩৯৬ হেক্টর বনভূমি রয়েছে মেদাকচ্ছপিয়ায়। কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের আওতাধিন মেদাকচ্ছপিয়া অফিস ও সিএমসি'র মাধ্যমে এসব বনভূমি ব্যবস্থাপনা করা হয়। বন উপড়ে বনভূমি দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণের কারণে মেদাকচ্ছপিয়া বনাঞ্চল এমনিতেই হুমকির মধ্যে রয়েছে। স্বল্প জনবলে বন বিভাগের নজরদারির অভাবে বেপরোয়া এখন স্থানীয় বনদস্যুরা।

শীতের শেষে গাছের পাতা ঝরে যায়। বসন্তের শুরুতে প্রকৃতি জেগে ওঠার সময় বনে আগুনের যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে বড় গাছগুলো কোনোমতে টিকে থাকলেও ছোট গজানো হাজারো উদ্ভিদ ও কাণ্ড থেকে গজানো চারাগাছ পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জীববৈচিত্র্য ও নানা প্রাণ।

স্থানীয় ওয়ার্ড আ'লীগের সাধারন সম্পাদক আকতার কামাল জানান, বসন্তকালের শুরু থেকেই বনে আগুন দেওয়া হয়। প্রকৃতিকে ধ্বংস করতেই এসব কর্মযজ্ঞ। মূলত বনের জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে আগুন দিয়ে বনের গাছ পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বনের জমি দখলে নিতে বনের গাছপালা কাটলে বিভিন্ন ধরনের আইনি জটিলতায় পড়তে হয়। কিন্তু আগুনে গাছ পুড়িয়ে বনের জায়গা দখল নিতে অনেক সুযোগ তৈরি হয়। এসব কাজে স্থানীয় দখলবাজ, একাধিক মামলার আসামী উমর আলী, তার পুত্র আনোয়ার, আবদুল আজিজ, গ্রাম পুলিশ নুর মোহাম্মদ ও হেলাল জড়িত দাবী করে
ডিএফও'কে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে বলে জানান। তবে তাৎক্ষনিক অভিযুক্ত কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান শফি মেম্বার বলেন, আগুন পুড়ে সাবাড় হচ্ছে গাছপালা ও পোকামাকড়। এতে তৈরি হচ্ছে খাবারের সংকট। বন ছেড়ে পাখি ও প্রাণীগুলো লোকালয়ে আসছে। এ রকম চলতে থাকলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে যাবে প্রাকৃতিক এ উদ্যান। তাই যেভাবেই হোক বন ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।

ইউনিয়ন আ'লীগ সহ সভাপতি এম বেলাল আজাদ বলেন, প্রকৃতিকে তার মতো করে বাঁচতে দিতে হবে। কিন্তু আমরা বনের ভেতর আগুন দিয়ে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছি। বনের ভেতর বসবাসরত হাজারো প্রাণীর বসবাসের স্থান ধ্বংস করে দিচ্ছি। প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছি। এটা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির একটা কারণ।

বনে আগুন দেওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে গাছ ধ্বংসের মাধ্যমে বনভূমি দখল করা, এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, আগুনের কারণে নতুন করে গাছ জন্মাতে পারে না। তাই যেভাবেই হোক, মেদাকচ্ছপিয়ার বন রক্ষা করতে হবে, আমাদের বেঁচে থাকার তাগিদেই।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বনের ভেতর আগুনের কারণে বনের জীববৈচিত্র্য নষ্ট, কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে পরিবেশের ক্ষতি, মাটির উপরিভাগের কার্যক্ষমতা হারানোসহ পুরো ইকোসিস্টেমের ক্ষতি হচ্ছে। ইকোসিস্টেম রক্ষার্থে বনের আগুন দেওয়া প্রতিরোধ করতে হবে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, বনের ভেতর বসবাসকারী লোকজন ইচ্ছা করেই আগুন দিয়ে থাকে। বিশাল এলাকার বন আমাদের স্বল্প জনবল দিয়ে তা রক্ষা করতে পারছি না। তাই স্থানীয়দের সচেতন করার পাশাপাশি আমরা বন রক্ষায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছি।

রিলেটেড নিউজ

সন্দ্বীপে গোপনে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার ঘোষণা দিল এক ইউপি চেয়ারম্যান

সন্দ্বীপে গোপনে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার ঘোষণা দিল এক ইউপি চেয়ারম্যান

দৈনিক অনুসন্ধান : নিজস্ব প্রতিবেদক পবিত্র মাহে রমযানে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে সংকটে পড়া মানুষের পাশে থাকার ...বিস্তারিত


গোমস্থাপুরে লুঙ্গি পরে অস্ত্র ব্যবসায়ী ধরল পুলিশ

গোমস্থাপুরে লুঙ্গি পরে অস্ত্র ব্যবসায়ী ধরল পুলিশ

দৈনিক অনুসন্ধান :   ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে দেশীয় সুটারগানসহ মো.জুবায়ের (২...বিস্তারিত


শিবগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্থ ৬ পরিবার পেল টিন, নগদ টাকাও খাদ্য সামগ্রী

শিবগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্থ ৬ পরিবার পেল টিন, নগদ টাকাও খাদ্য সামগ্রী

দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ  শিবগঞ্জে  আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ৬টি পরিবারের মাঝে উপজেলা প...বিস্তারিত


মধুপুরে  স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবিতে হকার্সদের মানববন্ধন

মধুপুরে স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবিতে হকার্সদের মানববন্ধন

দৈনিক অনুসন্ধান :  আঃ হামিদ মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ  ফুটপাত হকার্সদের পুনর্বাসনের দাবিতে টাঙ্গাইলের মধুপ...বিস্তারিত


চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাতিজিকে ধর্ষণ মামলায় খালাস চাচা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাতিজিকে ধর্ষণ মামলায় খালাস চাচা

দৈনিক অনুসন্ধান :   ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আপন ভাতিজিকে ধর্ষণের মামলায় খালাস পেয়েছেন চ...বিস্তারিত


চাঁপাইনবাবগঞ্জে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা ও বায়োমেট্রিক গ্রহণ কার্যক্রমের উদ্বোধন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা ও বায়োমেট্রিক গ্রহণ কার্যক্রমের উদ্বোধন

দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরটিএ চাঁপাইনবাবগঞ্জে উদ্যোগে এ...বিস্তারিত



সর্বপঠিত খবর

বিয়ে করে ৩ মাস সংসার করে পালিয়ে যান সন্দ্বীপের শিপন

বিয়ে করে ৩ মাস সংসার করে পালিয়ে যান সন্দ্বীপের শিপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রেম  করে পালিয়ে বিয়ে করেন মোহাম্মদ শিপন ও রিমা সরকার। বিয়ের ৩ মাসের মাথায় স্ত্রী রিমা সরকার কে ...বিস্তারিত


সন্দ্বীপে পুলিশ কর্তৃক অন্তঃস্ত্ত্বা নারী নির্যাতিত, গর্ভের সন্তান মৃত!

সন্দ্বীপে পুলিশ কর্তৃক অন্তঃস্ত্ত্বা নারী নির্যাতিত, গর্ভের সন্তান মৃত!

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাউছার মাহমুদ দিদারঃ  চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে  সিভিল পোশাকে আসামী ধরতে গিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় ...বিস্তারিত



সর্বশেষ খবর