শিরোনাম
দৈনিক অনুসন্ধান | ০৪:১০ পিএম, ২০২৩-০৮-১৭
ফয়সাল আজম অপু, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য মোসাঃ জোহরা বেগমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি ভিজিডি কার্ড গরিবদের মাঝে বিতরন না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আত্মীয়দের মাঝে বিতরণ, সারমারসেবুল পাম্প নিয়ে কেলেংকারী, চাচাকে দিয়ে সরকারি গাছ কাটা, ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে শালিসি বৈঠক চলাকালীন সময়, ভরা মজলিসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ সহ জুতা দিয়ে মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা সহ বিভিন্ন কার্ড দেয়ার নাম করে তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অনেক অভিযোগও রয়েছে।
জানা যায়, সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য জোহরা বেগম দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছেন। সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দ দিতে জনসাধারনের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে টাকা নিয়ে থাকেন তিনি। ২০২২/২৩ সনের ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ পেয়ে ২টি গ্রামকে বাদ দিয়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কার্ড তার নিজ গ্রামের বাসিন্দা ও ঘনিষ্ট আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে দিয়ে দেন।
ঝিলিম ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের আমনুরা-মাষ্টারপাড়া গ্রামের লাকি আলীর স্ত্রী ফতেনুর বেগম জানান, ৩ মাস আগে জোহরা মেম্বার ভিজিডি কার্ড করে দিবো বলে আমার কাছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা নিয়ে টালবাহানা করছে।
আমনুরা মিশন গ্রামের আজিমের স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, আমার ছেলের বউ আঁখি খাতুনের জন্য ৪ মাস আগে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দিবো বলে ৬ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু তার কাছে অনেক ঘুরাঘুরির পরও কার্ড করে দিচ্ছেনা, টাকাও দিচ্ছেনা।
২ নং ওয়ার্ডের আমনুরা-শিশাতলা রেলগেটের তসলিম উদ্দিন বলেন, আমার পরিবার পানির কষ্টের কারনে মহিলা মেম্বার জোহরা বেগমের কাছে পানির পাম্পের জন্য যায়। তিনি আমাকে পানির পাম্প নিলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ লাগবে বলে জানান। আমি গরিব মানুষ অনেক কষ্টে ধারদেনা করে ১০ হাজার টাকা দিই। কিন্তু ৬ মাস পার হয়ে গেলেও পানির পাম্প দিচ্ছে না। বরং পাম্প কিংবা টাকা চাইতে গেলেই গালাগালি করে।
স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে যাদের কার্ড প্রদান করা হয়েছে তারা হচ্ছেন, জোহরা বেগমের নিজ চাচাত বোন নাসিরের স্ত্রী মুক্তা সহ কয়েকজন আত্মীয়।
গত ২০ জুন ২০২৩ সকাল ১১ টার দিকে মহিলা ইউপি সদস্য জোহরা বেগম ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে ঢুকে ৯ নং ওয়ার্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ শালিস চলাকালীন সময় সাবমারসেবুল পাম্প বসানোকে কেন্দ্র করে চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। এবং এক পর্যায়ে পায়ের জুতা খুলে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাসুূদ পারভেজকে আঘাত করে ও গালিগালাজ করিয়া শালিসে উপস্থিত সদস্যদের সামনে অপদস্ত করে বলে অভিযোগ সুত্রে জানা যায়। সে সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে ইউপি সদস্য প্যানেল চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চাউল কল মালিক সমিতি ঝিলিম ইউনিয়নের গরিব মানুষের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৯ টি ওয়ার্ডে ৯ টি সাবমারসেবুল পাম্প সরবরাহ করে। ৮ টি ওয়ার্ডে বসানো হলে অবশিষ্ট পাম্প ২ নং ওয়ার্ডবাসী ও অন্য সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করে মিশন গ্রামে বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে মহিলা মেম্বার জোহরা বেগম তার চাচা আলকাস আলীর বাড়িতে বসাতে বলে। তার সিদ্ধান্তে রাজি না হওয়ায় শালিসি বৈঠক চলাকালীন সময় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই দিন ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডের ভিজিএফ কার্ডের চাউল বিতরণ ছিলো তাই, ঘটনাস্থলে ইউপি ওয়ার্ড সদস্য, সচিব, সহঃ সচিব, গ্রাম পুলিশ সহ শতাধিক কার্ডধারী এই ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন।
তার নির্দেশে তার চাচা আলকাস আলীর সরকারি জমিতে লাগানো নিমগাছ কাটার অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য, আমার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। (মামলা নম্বর-৫৭ পি/২০২৩)
পরবর্তীতে আদালত অত্র ৩ নং ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান গোলাম লুৎফুল হাসান জোহরা বেগমের অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন বলে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।
এ ব্যাপারে মহিলা ইউপি সদস্য জোহরা বেগম তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি রাজশাহী বরেন্দ্র অফিসে বিজি আছি। তবে সময়, সুযোগ পেলে দেখা করে বিস্তারিত বলবো বলে ফোন কেটে দেন।
ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম লুৎফুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, পারভেজ মেম্বারের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বার জোহরা বেগম আদালতে মামলা করলে আদালত আমাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে পারভেজ মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়াই সেভাবেই আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। অন্যান্য বিষয়ে সাক্ষাৎ এ কথা বলতে চান তিনি।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রওশন আলী অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ঝিলিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিতে বলেছি। তারপরও যদি নিষ্পত্তি না হয়ে থাকে তাহলে যথাসময়ে তদন্তপুর্বক আইনানুগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জ...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : চট্টগ্রামে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া এক সিএনজি চালককে উদ্ধার করেছে বায়েজিদ থানা পুলিশ। এ ...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : মু. মুবিনুল হক মুবিন, চট্টগ্রাম। পবিত্র 'ইদুল ফিতর' উপলক্ষ্যে আল করন - চট্টগ্রামসহ দেশবাস...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চোর চক্রের দুইজনকে গ্...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : জাকির হোসেন সুমন , ব্যাুরো প্রধান ইউরোপ : বাংলাদেশের ৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভেন...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : জাকির হোসেন সুমন , ব্যাুরো প্রধান ইউরোপ : মুসলিম উম্মার বরকত, রহমত ও নাজাতের মাস মাহে র...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 dailyonusondhan | Developed By Muktodhara Technology Limited