শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪  

শিরোনাম

ক্ষমতাধরদের বর্বরতায় কষ্ট পাচ্ছে মানুষ

দৈনিক অনুসন্ধান    |    ০২:০১ পিএম, ২০২০-১২-২৩

ক্ষমতাধরদের বর্বরতায় কষ্ট পাচ্ছে মানুষ

আজ থেকে ৪২ বছর আগে পশ্চিমা শক্তিগুলোর অন্যতম মিত্রদের তালিকায় ছিল ইরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার তৎকালীন ইরানকে ‘বিশ্বের অন্যতম সমস্যাসংকুল অঞ্চলের একটি স্থিতিশীল দ্বীপ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। রাজনৈতিক বিবর্তনের ধারায় সেই ইরান পশ্চিমাদের কাছে একটি ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ দেশটিকে ‘অ্যাক্সিস অব এভিল’ বা ‘শয়তানি চক্রের’ অন্যতম সদস্য বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

১৯৭৯ সাল-পরবর্তী ইরানের নীতি ও কার্যক্রমকে পশ্চিমা বিশ্ব ধ্বংসাত্মক হিসেবে দেখেছে এবং সে কারণেই ইরানকে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে তারা দেশটির ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে এসেছে। এ ধরনের ‘শাস্তিমূলক’ অবরোধের বিষয়ে যে দেশের নামডাক সবচেয়ে বেশি, সেটি হলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০টি দেশে নানাভাবে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। তবে ইরানের ওপর যত দিন এবং যে মাত্রায় অবরোধ আরোপ করে রাখা হয়েছে, তা নজিরবিহীন।

টানা ৪০ বছর ধরে ইরানকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করে রাখা হয়েছে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে নিম্নতম আর্থিক, বাণিজ্যিক, ব্যাংকিং, জ্বালানি, যোগাযোগ, শিল্প ও বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক থাকলেও কার্যত সারা বিশ্ব থেকে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। এ অবরোধের লক্ষ্য একটাই। সেটি হলো ইরানকে ‘সাজা দেওয়া’। ‘সাজা’ কথাটি যখন আমাদের সামনে কেউ বলে, তখন আমাদের মনে প্রথম প্রশ্ন উদয় হয়, ‘সাজাটা কার বিরুদ্ধে এবং তার অপরাধ কী?’

ইরানের ক্ষেত্রে বিবেচনা করলে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমাদের বিচারে ইরানের রাজনীতিকেরা অপরাধ করেছেন এবং তাঁদের সে কারণে সাজা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আদতে হচ্ছেটা কী? আদতে যেটি হচ্ছে তা হলো ইরান নামক একটি ভূখণ্ডের ওপর অবরোধ আরোপ করা হয়েছে এবং তার জন্য সেখানকার নিরপরাধ নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ আপামর জনসাধারণ মৌলিক মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেখানে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সাড়ে আট কোটি মানুষকে অভাবের মধ্যে রাখা হচ্ছে। বাইরের দুনিয়ায় তাদের যাতায়াতকে সীমিত করে রাখা হয়েছে।

এটিকে ন্যায্যতা দিতে গিয়ে অবরোধ আরোপকারীরা সাধারণ মানুষের কষ্টকে যুদ্ধক্ষেত্রে নির্দোষ ব্যক্তিদের হতাহত হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেন এবং এটিকে ‘কোল্যাটেরাল ড্যামেজ’ বা আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ইরানের বিষয়ে বলা হয়ে থাকে, দেশটি পরমাণু বোমা বানালে তা সারা বিশ্বের অগণিত মানুষের জীবনকে হুমকিতে ফেলবে। এ কারণে অবরোধের মাধ্যমে দেশটিকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রাখা হচ্ছে। এতে সাধারণ ইরানিরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়লেও বৃহত্তর স্বার্থে তাদের সেই দুর্ভোগকে ‘আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি’ হিসেবে ‘মেনে নিতে হবে’।

যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি অমানবিক অবরোধের শিকার হয়েছে কিউবা। যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী অবস্থানের কারণে এ দেশটির ওপর পাঁচ দশক ধরে কঠোর অবরোধ আরোপ করা হয়েছিল। সুদীর্ঘ সময় ধরে কিউবার ওপর অবরোধ আরোপ করে রাখায় দেশটিকে কৃত্রিমভাবে অভাবের জালে আটকে রাখা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা চলছে। অবরোধের শিকার হয়ে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে সে দেশটির জনগণকেও যুগ যুগ ধরে সীমাহীন যন্ত্রণার জীবন পার করতে হচ্ছে। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো, যে লক্ষ্য সামনে রেখে ইরান, উত্তর কোরিয়া কিংবা কিউবাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হয়েছে, সেই লক্ষ্য সর্বাংশে অর্জিত হয়নি। ইরান, কিউবা অথবা উত্তর কোরিয়ার সরকারগুলো এই এত বছরেও আপস করেনি। তাদের ওপর থেকে অবরোধও ওঠেনি। এর ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার এ বিশ্বব্যবস্থায় অবরোধের কারণে দেশে দেশে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসছে। যেকোনো বিবেচনায় একেকটি জনগোষ্ঠীকে এভাবে কষ্টকর জীবনে অবরুদ্ধ করে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। অবরোধ আরোপ স্পষ্টতই বর্বরতা।

এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

কুরোশ জিয়াবারি: ইরানভিত্তিক একজন সাংবাদিক এবং স্ট্যানফোর্ডে আমেরিকান মিডল ইস্টার্ন নেটওয়ার্ক ফর ডায়ালগের একজন ফেলো

রিলেটেড নিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবাসিক এলাকায় কসাই খানা নির্মাণ না করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবাসিক এলাকায় কসাই খানা নির্মাণ না করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বালিগ্রাম এলাকায় কসাই...বিস্তারিত


নাগরিক উদ্যোগে জরুরি সভায় খোরশেদ আলম সুজন: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কর্পোরেট সন্ত্রাসীদের রুখে দাড়ান

নাগরিক উদ্যোগে জরুরি সভায় খোরশেদ আলম সুজন: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কর্পোরেট সন্ত্রাসীদের রুখে দাড়ান

মুহাম্মদ মাঈন উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি : পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কর্পোরেট সন্ত্রাসীদের রুখে দাড়ানোর আহবান ...বিস্তারিত


সন্দ্বীপে ৮বছর পর বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ঃ হামলা ও ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ করল বিএনপি নেতা তেনজিং

সন্দ্বীপে ৮বছর পর বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ঃ হামলা ও ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ করল বিএনপি নেতা তেনজিং

দৈনিক অনুসন্ধান : ...............নিজস্ব প্রতিবেদক ২৮ আগস্ট সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প...বিস্তারিত


দোয়া মাহফিলে সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম: আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ছিলেন মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক

দোয়া মাহফিলে সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম: আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ছিলেন মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক

দৈনিক অনুসন্ধান : কেফায়েত উল্লাহ কায়সার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ইউনাইটেড  কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ উত্তর কাট্টলী আলহাজ্...বিস্তারিত


আমার দেখা একজন  স্বপ্ন ফেরিওয়ালা ও বাস্তবতার রূপকার

আমার দেখা একজন স্বপ্ন ফেরিওয়ালা ও বাস্তবতার রূপকার

দৈনিক অনুসন্ধান : কাউছার মাহমুদ দিদারঃ সন্দ্বীপে উন্নয়নের ইতিহাস সৃষ্টিকারী একজনই দেখলাম। যিনি সন্দ্বীপ পৌরসভা ...বিস্তারিত


নিখোঁজ হওয়া আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের গুমের রহস্যভেদে সরকারের অনীহা

নিখোঁজ হওয়া আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের গুমের রহস্যভেদে সরকারের অনীহা

দৈনিক অনুসন্ধান : গেলো বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে একজন তরুণ ইসলামিক লেকচারার আফছানুল আদনান, যিনি আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ ...বিস্তারিত



সর্বপঠিত খবর

বিয়ে করে ৩ মাস সংসার করে পালিয়ে যান সন্দ্বীপের শিপন

বিয়ে করে ৩ মাস সংসার করে পালিয়ে যান সন্দ্বীপের শিপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রেম  করে পালিয়ে বিয়ে করেন মোহাম্মদ শিপন ও রিমা সরকার। বিয়ের ৩ মাসের মাথায় স্ত্রী রিমা সরকার কে ...বিস্তারিত


সন্দ্বীপে পুলিশ কর্তৃক অন্তঃস্ত্ত্বা নারী নির্যাতিত, গর্ভের সন্তান মৃত!

সন্দ্বীপে পুলিশ কর্তৃক অন্তঃস্ত্ত্বা নারী নির্যাতিত, গর্ভের সন্তান মৃত!

নিজস্ব প্রতিবেদক : কাউছার মাহমুদ দিদারঃ  চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে  সিভিল পোশাকে আসামী ধরতে গিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় ...বিস্তারিত



সর্বশেষ খবর