শিরোনাম
দৈনিক অনুসন্ধান | ০৯:১৮ এএম, ২০২২-০৯-১৯
ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে এবিষয়ে আহতের ভাই থানায় মামলা করলে তা নিয়েও নাটক করে থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী, আহতের পরিবার ও মামলা সুত্রে জানা যায়, গত আট সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে শফিকুলকে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে রফিকুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ঘটনার দিন বিকেলেই একজনকে আটক করে পুলিশ।
ওই রাতেই আহত শফিকুলের ভাই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আটক সোহেলসহ সন্ত্রাসী মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৫), মোঃ খাইরুল ইসলাম (৪০), মোঃ রবিউল (২২), মোঃ কামরুল (৩৫), মোঃ নাসির (৩২) মোঃ আলামিন (২৫) মোঃ জামাল (৩২), মোঃ নুরুল (৩০), মোঃ গোলাপ (৩২), মোঃ নাসির (৩২) কে আসামি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। তবে বাদী পক্ষের অজান্তেই এজাহার নিয়ে পুলিশের নানা নাটকীয়তা লক্ষ করা গেছে।
এজাহারভুক্ত ৯ নম্বর আসামি সোহেলকে আট সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে একই এলাকা থেকে এসআই জালাল এবং এসআই আশিষ গ্রেফতার করে নিয়ে আসে থানায়। তবে এজাহারে সোহেলের নাম বাদ দেয়া ও ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য রাত-ভোর তদবির চালায় থানার কথিত দালাল হাবিবুর রহমান। এবং বাদীকে বিভিন্ন ভুল-ভাল বুঝিয়ে সোহেলের নাম বাদ দিয়ে পূণরায় এজাহার দায়ের করিয়েছে এসআই জালাল বলে অভিযোগ করেন বাদী শহিদুল ইসলাম ও তার পরিবার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মহারাজনগর গ্রামের মৃত মুন্তাজ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম। গত ৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে বাড়ির পিছনে বের হলে রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে শফিকুলকে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী ঝাপটে ধরে গামছা দ্বারা মূখ বাঁধিয়া জোর পূর্বক প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে দেওয়ান মাঠ এলাকায় নির্জন কলাবাগানে নিয়ে যায় এবং শফিকুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে
দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে।
পরে শফিকুলের গলাটিপে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে চলে যায়। সকালে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে শফিকুলকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে ছাড়পত্র দিয়ে বেড রেষ্টে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রফিকুল ও খাইরুলের নেতৃত্বে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শফিকুলকে হত্যার উদেশ্যে রাতের অন্ধকারে এতবড় ঘটনা ঘটায়। ওদের নামে এর আগেও অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
আহতের স্ত্রী দুলালী বেগম বলেন, গত ১৯ আগষ্ট তারিখ সামান্য মসলা নিয়ে রফিকুলের পরিবারের সঙ্গে আমাদের সাথে ঝামেলা হয়, তারপর থেকেই দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে আমার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত গভীর রাতে বাড়ির পিছনে বের হলে একা পেয়ে রফিকুলের নেতৃত্বে আমার স্বামীকে অমানবিক নির্যাতন করে মৃত ভেবে ফেলে চলে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সুন্দরপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার আহসান উল হক জানান, শফিকুল ইসলামকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য এই জঘন্যতম হত্যার চেষ্টা করেছে তারা। সোহেল নিজেই শফিকুলকে মেরে ফেলার জন্য কুপিয়েছে। আর কি করে এধরণের প্রত্যক্ষ ঘটনার অভিযুক্ত আসামী গ্রেফতার হয়েও পার পেয়ে যায় তা আমার বোধগম্য নয়।
তিনি আরও বলেন থানার দালাল হাবিবুর রহমান, উপর মহলের অদৃশ্য ইশারায় এসআই জালালের যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।
সদর থানার সদ্য যোগদানকৃত ওসি আলমগীর জাহান ও পুলিশ সুপার এএইচ এম আব্দুর রকিবের নিকট দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবিষয়ে তদন্তের দাবি জানান মেম্বার আহসান উল হক।
এবিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জালাল জানান, আমার বিরুদ্ধে বাদীপক্ষের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন। বাদীর এজাহারের বিষয়ে আমি কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সোহেলের নাম পরিবর্তন করিনি। বরং তারাই সোহেলকে শিশু মনে করে এজাহার থেকে তার নাম বাদ দিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ. কে. এম আলমগীর জাহানের বক্তব্য নিতে দেখা করতে চাইলে, কয়েকদিন থানায় আসতে বলেও তিনি সাক্ষাৎ করেননি। তবে অনেক চেষ্টার পর মুঠোফোনে জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রথম এজাহারে ৯ নং গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আসামী সোহেলের নাম বাদীর অনিচ্ছা স্বত্তেও কেনো কৌশলে বাদ দেয়া হলো এবং তাকে ছেড়ে দেয়া হলো? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোহেলের বয়স অপ্রাপ্ত হওয়ায় মানবিক কারনে বাদীর সম্মতিক্রমেই নাম বাদ দিয়ে তাকে ছাড়া হয়েছে।
শিশু অপরাধ ও মামলার বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ড. তসিকুল ইসলাম জানান, শিশু হলেও অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে কিংবা মামলা গ্রহন করতে কোনো বাধা নেই। মামলা হলে এবিষয়ে শিশু আদালতে বিচার হবে। তাই বলে থানা পুলিশ নাম কাটানোর কোনো এখতিয়ার রাখেনা। নাম কাটিয়ে থাকলে পুলিশ প্রশাসনের শিশু অপরাধকে উৎসাহিত করা হ'য়েছে বলেও জানান তিনি।
ফয়সাল আজম অপু
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
০১৭১২৩৬৩৯৪৬
১৮.০৯.২০২২
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইসলামপুরে ২ টি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে প্রথমবারের মত স্বাধীনতার ৫২ বছর প...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎকারী ভুয়া এনজিও’র ম্...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : আসিফ জামান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত ...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের পুরাতনবারইপ...বিস্তারিত
দৈনিক অনুসন্ধান : ফয়সাল আজম অপু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ শিবগঞ্জ থানা পুলিশের চৌকস পুলিশ অফিসার এসআই সাইফুল ইসলাম, সফলতা...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2023 dailyonusondhan | Developed By Muktodhara Technology Limited